খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার গজালিয়া গ্রামের সন্তান। হাজী মহসিন রোড, রহমানিয়া মসজিদ লেন, খুলনার স্থায়ী বাসিন্দা। পিতা আকবর আলী সরদার ও মাতা মৃত আনোয়ার বেগম।
স ম বাবর আলী বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে গৌরবদীপ্ত এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছেন। দৌলতপুর বিএল কলেজে অধ্যায়নকালে ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ছাত্রলীগ থেকে বি এল কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে তার নেতৃত্বে দক্ষিণ খুলনার বহু যুবক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়। কলেজের ভিপি থাকার সুবাদে বহু ছাত্রদের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। তিনি খুলনা জেলা স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত হন। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে শহীদ হাদিস পার্কে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও প্রতিরোধ সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে ভারতে গমন করেন তার সাথে ছিল ঢাকার আসিফুর রহমান। এ্যাড. কে এস জামান, আবুল হাসান দুলু প্রমুখ।
তিনি ভারতের ইস্ট ইন্ডিয়ায় ইপিআর সদস্যদের নিকট অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং টাউন শ্রীপুর এর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সেই যুদ্ধে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়- কাজল, নারায়ণ ও নাজমুল। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে গড়ইখালী রাজাকার ক্যাম্প দখল ও রাজাকারদের নিকট থেকে অস্ত্র সংগ্রহে নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে কেয়ারগাতী রাজাকার ঘাঁটি দখল করেন এবং ৫ জুলাই পাইকগাছা থানা আক্রমণ করে একটি রাইফেল ও ৫৭টি বন্দুক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন। তালা থানার মাগুরা যুদ্ধে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, ইউনুস আলী ও স ম বাবর আলী যৌথ কমান্ডে অংশগ্রহণ করেন। কপিলমুনি স্মরণীয় যুদ্ধে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নির্দেশে দেরাদুন মিলিটারি একাডেমি টা-ুয়ার লিডারশীপ প্রশিক্ষণের জন্য গমন করেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে আবার পুনরায় রণাঙ্গনে ফিরে আসেন। খুলনা দখল যুদ্ধে তিনি একটি দলের নেতৃত্ব দেন। ইতিহাসে বাবর আলী একটি স্মরণীয় নাম।
১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য ও তিনবার পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
খুলনা গেজেট/এএজে